সৌরভ দত্ত,পশ্চিমবঙ্গ: বাংলার ভোট ময়দানে বুধবার চতুর্মুখী লড়াই। রাজ্যের ৬ কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচন। আরজি কর কাণ্ডের পর এই প্রথম রাজ্যে কোনও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই আর পাঁচটা নির্বাচনের চেয়ে এবারের ভোট বঙ্গ রাজনীতিতে আলাদা একটি চর্চার বিষয়। গত কয়েক মাসে আরজি কর ইস্যুতে বিরোধী দলগুলি ছাড়াও নানা সংগঠনের উপর্যুপরি বিক্ষোভে খানিকটা হলেও ব্যাকফুটে শাসকদল তৃণমূল। তাই এটা জোড়াফুলের কাছেও ‘জবাব’ দেওয়ার ভোট। উল্টোদিকে, আরজি কর কাণ্ডকে ইস্যু করে একের পর এক দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে এই উপনির্বাচনেই শাসকদলকে প্যাঁচে ফেলার চেষ্টায় ফাঁক রাখছে না বাম, বিজেপি থেকে কংগ্রেস।
বুধবার দক্ষিণবঙ্গের নৈহাটি, হাড়োয়া, মেদিনীপুর, তালডাংরা এবং উত্তরবঙ্গের সিতাই ও মাদারিহাট কেন্দ্রে উপনির্বাচন। রাজ্যের এই ৬টি কেন্দ্রের মধ্যে একমাত্র মাদারিহাট ছাড়া বাকি পাঁচটিই শাসকদল তৃণমূলের দখলে রয়েছে। গত ২০২১ সালের নির্বাচনের এই ‘হিসেব’ ধরলে ‘২৪-এর উপনির্বাচনেও অ্যাডভান্টেজ তৃণমূল। তবে এরই মধ্যে গঙ্গা-পদ্মা দিয়ে বয়ে গিয়েছে বহু স্রোত। ঘটে গিয়েছে আরজি করের নৃশংস-কাণ্ড। শাসকদল তৃণমূলকে তুলোধনা করে একটানা সোচ্চার বিরোধীরা। তাই পাল্টা জবাবের বুধবার এই উপনির্বাচন তৃণমূলের কাছেও বড় চ্যালেঞ্জ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উপনির্বাচনে মানুষের রায় কোন দিকে যায় সেদিকে তো নজর থাকবেই। সেই সঙ্গে ২০২৬-এর বিধানসভা ভোটে এই ৬ কেন্দ্রের ‘ট্রেন্ড’ও আগেভাগে সামান্য ঠাহর করা সম্ভব হবে। শাসকদলের বিপক্ষে রায় গেলে বুঝতে হবে আরজি কর কাণ্ডের ভালোমতো ‘এফেক্ট’ পড়েছে গ্রামীণ বাংলাতেও। তবে সেটা না হলে, এটাই বুঝতে হবে যে বিদ্রোহ যতই দানা বাঁধুক, তৃণমূলের পাকাপোক্ত ভীতটা এবারেও নাড়িয়ে দিতে পারলেন না শুভেন্দু, সুকান্ত থেকে সেলিম, বিমানরা। এমনই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
রাজ্যের ৬ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়ল ৬৯.২৯ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে তালড্যাংরায় ৭৫.২০ শতাংশ এবং সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে নৈহাটিতে ৬২.১০ শতাংশ।